Friday, September 9, 2016

My write up on Hilsha in Hyangla Henshel

ইলিশ বিলাস বাঙালির চিরকালীন ঐতিহ্য। সেই ইলিশ নিয়ে হ্যাংলা হেঁসেল এর পাতায় হয়ে গেল গঙ্গা-পদ্মা ঘটি-বাঙাল এর ঠোকাঠুকি হাতায় হাতায়, কলমে কলমে। একবার পদ্মা বলে আমায় দেখ তো একবার গঙ্গা বলে আমায় দেখ। তাবড় তাবড় বিশেষজ্ঞ, সেফ, লিখিয়েদের সঙ্গে হংস মধ্যে বক যথা আমি। দু'কলম লিখলাম ডেনমার্ক যেতে যেতে দুবাই এয়ারপোর্ট এ বসে। পড়ে দেখো/দেখিস/দেখুন সবাই।
সেদিন ফেসবুকে কিছু ছবি দেখছিলাম এক বন্ধুর বন্ধু তুলেছেন দীঘা মোহনার, ভুল করলাম কোনও ফুল ভেবে। যেন রূপোলী শতদল। ছবিটা জুম করে দেখলাম যত্ন করে সাজানো ইলিশ। চকচক করছে। দীঘায় পর্যটকরা এই সময় তাজা ইলিশের আকর্ষণে এই সময় পাড়ি জমান। দীঘা, শঙ্করপুর মৎস্য বন্দর, মন্দারমণী র নিকটবর্তী অঞ্চলে এবার ইলিশের আহরণ বেশ ভাল। ভাল ইলিশের জোগানে তাই মাছের বাজারেও বেশ একটা চাঙ্গা ভাব। সাধারণত ইলিশ পূর্ণিমা র আগের সাতদিন থেকে পূর্ণিমার দিন ও তার পরের সাতদিন পর্যন্ত মোট পনেরো দিন ধরে কম বেশি ডিম পাড়ে। স্ত্রী ইলিশ ডিম পাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষ ইলিশ সেই ডিম কে নিষিক্ত করে। ডিম ফুটে দু দিনের মধ্যে রেণু ইলিশ তৈরি হয়। কিছু দিনের মধ্যে এই রেণু ইলিশ পোনায় রুপান্তরিত হয়। পোনা ইলিশ একটু বড় হলে তাকে বলা হয় জাতক ইলিশ বা জাটকা ইলিশ। ইলিশের ডিম পাড়ার জলের লবনাক্ততার ওপর নির্ভর করে ইলিশের গুণগত মান। ইলিশ সাধারণত আধা মিঠা আধা নোনা জলের মিশ্রিত পরিবেশকে ডিম পাড়ার আদর্শ স্থান হিসেবে বেছে নেয়। ভারত, বাংলাদেশ ও মায়ানমার গোটা বিশ্বের ইলিশ উৎপাদনের অধিকাংশ যোগান দেয়। আজকের হ্যাংলার পাতায় হাতের কাছে ইলিশের প্রাপ্তিস্থানের হদিস দিতে গিয়ে একটা ছোট্ট অনুরোধ রাখছি। দয়া করে কম দামের লোভে পড়ে নয় ইঞ্চির কম ইলিশ কেনা থেকে বিরত থাকুন। নয় ইঞ্চির কম জাতক ইলিশ ইলিশ ধরা ও তার ক্রয় বিক্রয় আইনত নিষিদ্ধ। হ্যাংলার ইউটিউব চ্যানেলে যে ভিডিও আপনারা দেখেন তার শ্যুটিং এ আমি আর সুমিত ক্যামেরা নিয়ে ঘুরছিলাম। এক বৃষ্টি ঝিরঝির দিনে ডায়মন্ডহারবার লোকাল ধরে দুপুর দুপুর ডায়মন্ডহারবার পৌঁছলাম। মৎস্য দফতরের জেটিতে তখন ভিড় করেছে এম ভি সাবিত্রী, জয় মা তারা, মা যোগমায়া, জয় মা তারিণী, এম ভি জাহ্নবী, এম ভি নাড়ুগোপাল, মা প্রিয়া, বাবা শম্ভুনাথরা। হরেক ট্রলারের উজ্জ্বল রঙ চোখে ধাঁধা লাগিয়ে দিচ্ছে। হাওয়ায় ডানা মেলে উড়ছে শঙ্খচিল। ইলিশ নামানোর পর তখন 'বরফ লোডিং' হচ্ছে ট্রলারে। জাল শুকিয়ে ছেঁড়া জাল মেরামতিও চলছে। এরই মাঝে এম ভি শম্ভুনাথের কাছে যেতেই বোঁটকা আঁশটে গন্ধ নাকে এল। খবর নিয়ে জানলাম শেষ যাত্রায় প্রায় পাঁচশো মণ ইলিশ জালে পড়েছে শম্ভুনাথের ; কিন্তু বরফের জোগান অত মাছ সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত না থাকায় প্রচুর মাছ পচে গেছে। শহুরে বাঙালি মনে ইলিশ পচানো (!?) বিষয়টা ভাল ভাবে নেওয়া গেল না। একটা কালচারাল শক লাগল। বলে কি? এরা? সাত পাঁচ ভাবছি হঠাৎ দেখি সাদা শাড়ি পরা এক বৃদ্ধা ওই নদীর জলে ভাসতে থাকা আধপচা বাতিল ইলিশ গুলো কুড়োচ্ছে। ক্যামেরাকে পেশা করে অনেক ছবিই করতে বাধ্য হই আমরা। কিন্তু এ কোন ছবি? ডায়মন্ডহারবার ব্লকে প্রায় শতাধিক ট্রলার আছে। অখিল প্রামাণিকের ট্রলার চোদ্দজনকে নিয়ে ইলিশ ধরার জন্য ভেসে পড়ার আগে মজুত করে পনেরোশ লিটার ডিজেল, সত্তর পঁচাত্তর ব্লক বরফ,দুশো কিলো চাল। এছাড়াও ডাল,আলু,পেঁয়াজ,সরষের তেল,মশলাপাতি,চা,চিনি মিলিয়ে প্রায় দশ হাজার টাকার সামগ্রী। জটাধর বর, সঞ্জয় প্রামাণিক, শেখ আবু শফি,নীলোৎপল মন্ডল,গরাই মিদ্দা,প্রসেনজিৎ কবিররা বছরের অন্য সময় চাষবাস, হাতের কাজ, কাঠের কাজ করেন বা দিনমজুর খাটেন। কিন্তু বছরের এই সময় জুন থেকে সেপ্টেম্বর ভেসে পড়েন রুপোলি ফসলের আশায়। নোনা হাওয়ায় করকর করে চোখের কোন। খর নুন চোখের সাদা অংশ আরক্ত হয়ে ওঠে।



Do Share your VIEWS and REVIEWS in the comment box below.

Follow me in facebook https://www.facebook.com/nandan2017/
                       twitter https://twitter.com/Nandanpaul