Friday, April 19, 2024

সম্পর্কের উত্তাপ বাড়িয়ে রাখুন


আমার শ্বশুরমশাইয়ের বয়স প্রায় ৮৩ বয়স জনিত সমস্যা সঙ্গে অ্যালঝাইমার্স। ফলে সমস্যা একটু হয় মাঝেমধ্যে। এই সে দিন বললেন -
খবরের কাগজে বলছে হাওয়ায় নিউমোনিয়া হচ্ছে। 
যাঁরা স্মৃতিবিপন্ন মানুষদের নিয়ে ঘর করেন তাঁদের কাছে এরকম ঘটনা খুবই স্বাভাবিক। স্মৃতিশক্তির বিপন্নতায় ওঁরা ভুলতে থাকেন। যাক সে অন্য কথা। ইদানিং সেই শ্বশুরমশাইয়েরও গরম লাগছে। রীতিমত হাঁসফাঁস করছেন গরমে। সারা দুপুর জেগে থাকছেন গরমে। ওনার এয়ার কন্ডিশনার সহ্য হয় না। তাই আমরা একটা এয়ার কুলার কিনতে গেলাম। সেখানে গিয়ে একটা ঘটনা শুনলাম। সেটাই আজকের ব্লগে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি। 

পৃথুলা এক মহিলার গল্প। গল্প নয় মোটেই। একেবারে টাটকা বাস্তব। তো সেই মহিলা একে পৃথুলা মানুষদের গরম একটু বেশি লাগে তার মধ্যে এই মরুভূমির মতন গ্রীষ্মতাপ। একেবারে জর্জরিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেন একটি এসি কেনার। সিদ্ধান্তটি নেওয়ার সময় থেকে শুরু হয় তাঁর স্বামীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি। পরবর্তীতে সেটা পৌঁছায় ঝগড়াতে। ওই শোরুমের এক কর্মীর মুখে ঘটনার বিবরণ শুনছি। 


তারপর ওই মহিলা একপ্রকার নিরুপায় হয়ে নিজেই চলে আসেন ইলেকট্রনিক কোম্পানির শোরুমে। সঙ্গে নিজের জমানো ২৮ হাজার টাকা। পিছু পিছু চলে আসেন ওই মহিলার স্বামী। শো রুমেই শুরু হয়ে যায় দম্পতির বাগবিতণ্ডা। শো রুমের কনকনে এয়ার কণ্ডিশনার চলছিল। তার মধ্যেই মহিলা দরদর করে ঘামছিলেন। স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া চলছিলই। মহিলা ততক্ষণে বিলিং করিয়ে নিয়েছেন। ২৮ হাজার ডাউন পেমেন্ট। বাকি টাকা ইন্সটলমেন্টে। পরের দিন সকালেই ডেলিভারির কথা ছিল। পৃথুলা সেই মহিলা বারেবারে স্টোর কিপারদের বলেছিলেন সকাল সকাল এসিটা ডেলিভারি দিতে।

পরের দিন সকালে শোরুম খুলতে ওই ভদ্রমহিলার স্বামীর একটা ফোন। এ প্রান্তে শোরুমের কর্মী, যিনি ফোন ধরেছিলেন তিনি বলছেন- 
-ডেলিভারি ম্যানরা এলেই আপনাদের এসিটা পাঠানো হবে। 
ও প্রান্তে ভদ্রলোক তখন হাউহাউ করে কাঁদছেন। বলছেন- 
-আর ওই এসি কার জন্য পাঠাবেন। ওটা আপনাদের কাছেই রেখে দিন। আমার স্ত্রী আজ ভোর রাত্রে মারা গিয়েছেন। 

শো রুমের কর্মীরা স্তম্ভিত। যেন সেই শোকের ছায়া ভুলতে পারছেন না এখনও ।                                  

গরমে সবাই ব্যতিব্যস্ত। সহজেই মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে। সম্পর্ক গুলোকে একটু সময় দিন। নইলে আপনার অবহেলার উপলব্ধি আপনি যতক্ষণে করবেন ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যাবে। সাবধানে থাকবেন এই উত্তাপে। মনের উত্তাপটা বাড়িয়ে রাখুন। বাইরের উত্তাপ বাড়ুক ক্ষতি নেই ভিতরের আগুনটা জিইয়ে রাখুন।