Sunday, March 22, 2015

For them who missed my column in Sangbad Pratidin, Robbar

My write up about 1983 world cup cricket win, published in Sangbad Pratidin, Robbar. Give your feedback.

সংবাদ প্রতিদিন এর রোববার এ প্রকাশিত আমার লেখা। যে বন্ধুরা মিস্ করে গেছো/গেছেন/গেছিস্ তাদের জন্য । কেমন হয়েছে বলো/বলবেন /বলিস্।

বন্ধু বাইলেন আমাদের স্কুল বয়সে রেডিওই ছিল দূরের জানলা। তাও সেটা সবসময় সহজলভ্য ছিল না। 'মারফি মিনিবয় ডিলাক্সে-এর' ব্যাটারি কমে গেলে বা ঝড়-জলে সিগন্যাল ডিস্টার্বড হলে রেডিও শোনার মজাটাই কিরকিরে হয়ে যেত। আমাদের নিস্তরঙ্গ জীবনে ঢিল মেরে যেত শেষ-বিকেলে হাতে পাওয়া সংবাদ পত্রের শিরোনাম। তখন ধারাবিবরণীর চেয়ে পাড়ার খেলার মাঠই বেশী ডাকত। যেহেতু বেড়ে ওঠার রেলওয়ে কলোনিটা কলকাতা থেকে অনেক দুর-জেলায়- তাই খবর কাগজ যখন হাতে এসে পৌঁছত তখন বোধহয় পরের দিনের কাগজ অর্ধেক ছাপা হয়ে যেত। আমাদের নিস্তরঙ্গ জীবনে ঢিল মেরে যেত শেষ-বিকেলে হাতে পাওয়া সংবাদ পত্রের শিরোনাম। '৮৩তে ভারতের বিশ্বকাপ জেতার 'সেলিব্রেশন'নেহাতই নাদান-বয়স আর ভৌগলিক ভাবে আলোকবৃত্তের অনেকটা বাইরে থাকায় ভালভাবে আঁচই করতে পারিনি। জীবন আচমকা কত কী দেয়! ২৫ বছরের একটা টাইম ল্যাপস্। কাট টু ২৩শে জুন ২০০৮। দিল্লির সুন্দর নগরের ৩৯ নম্বর বাড়ির বাইরের রাস্তা। বাড়িটার নাম-ফলকে লেখা মালিকের নাম কে.দেব। আমার সঙ্গী রেডিওর বদলে ক্যামেরা। রিপোর্টার দেবাশিসের সঙ্গে সেই পড়ন্ত বিকেলে পায়চারি করছি। আজ একটা ফাটকা খেলছি আমরা। '৮৩র বিশ্বজয়ী দলের সাপোর্ট স্টাফদের কানাঘুসোতে আড়ি পেতে পাওয়া একটা' টিপ 'কে লক্ষভেদ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। দেবাশিস বলছে - '১৯৮৩র ২৫শে জুন ওয়ার্ল্ড কাপ জেতার পর টিমমেট রা একসঙ্গে কোনও পার্টি করে নি। আজ এই বাড়িতে ২৫ বছরের তুলে রাখা সেই পার্টি! ভাবতে পারছিস? ছবি পেলে কি স্টোরি হবে? আনবিলিভেবল!' তখন ওর রক্তচাপ মাপলে পারদ স্ফিগমোম্যানোমিটারের স্কেলের উর্দ্ধসীমায় ঠোক্কর খাচ্ছে দেখা যেত হয়ত। দুপুর থেকে একই কথা বারবার বলে চলেছে। বিকেল ধীরেধীরে সন্ধ্যের হাত ধরে রাতের কাছাকাছি যেতে চাইছে। ইতিমধ্যে সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের কেউকেটা দু-তিনটে চ্যানেলের ডাকসাইটে কয়েকটা চেনামুখের আনাগোনা দেবাশিসের চোয়াল শক্ত করে দিচ্ছে বারবার। বিড়বিড় করে বলতে শুরু করল - ' কেঁচে গেল রে! এক্সক্লুসিভ থাকল না স্টোরি টা। এরই মাঝে একটি চ্যানেল 'ওবি ভ্যান'পাঠাবে কিনা জানার জন্য প্রতিনিধিকে ফোন করল। এপার থেকে -'স্যার জি ইয়ে ইন লোগো কি প্রাইভেট পার্টি হ্যায়, বিসিসিআই, স্পন্সর কোই ভি অ্যালাউড নেহি হ্যায়। তো মিডিয়া ক্যায়সে অন্দর যা পায়েগী?' ওপার থেকে কি নির্দেশ এল বুঝে ওঠার আগেই ময়দান ফাঁকা। বাকিরাও মহাজনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জুনের সেই সন্ধ্যায় মার্চ করল। সন্ধ্যের পড়ে যাওয়া আলোয় মরে যাওয়া আশা আর দেবাশিসের চোখ - দুটোই একসঙ্গে উজ্জ্বল হয়ে উঠল! খোঁজখবর সিদ্ধ চোখ ততক্ষণে দেখে নিয়েছে ৩৯ নম্বর বাড়ির ভিতরে জ্বলে ওঠা নরম মোমের আলোগুলো। যারা হাজার বাতির ঝলকানিতে অনায়াস, তাদের নিশিযাপনের ট্রেলারের আভাস পেয়ে 'দিল' তখন 'মাঙ্গে মোর'। ধীরে ধীরে দিল্লির সন্ধ্যে সাবালিকা হচ্ছে। আর বাড়িটার সামনে এক একটা সম্ভ্রান্ত গাড়ি এসে দাঁড়াচ্ছে। গাড়ি থেকে নেমে আসছেন সৈয়দ কিরমানি, দিলীপ ভেঙ্গসরকর, সুনীল গাভাসকর, কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্ত, শ্যাম্পেন হাতে কীর্তি আজাদ। একটা করে ছবি হচ্ছে, দেবাশিসের হাসি চওড়া হচ্ছে। এরপর এসে দাঁড়ানো গাড়ি থেকে নামলেন ৮৩র ফাইনালের লাস্ট ল্যাপ এর গোল্ডেন বয় মহিন্দর অমরনাথ, সস্ত্রীক। ঘড়ির কাঁটা জানান দিচ্ছে আজকের এক্সট্রা টাইম এর ডেটলাইন পেরল। ফিড পাঠিয়ে আজকের বুলেটিনে এই খবরটা ধরানো যাবে না। আর অ্যাসাইনমেন্ট-টায় যা সময় লাগবে, মনে হচ্ছে ততক্ষণে সব খাবারের দোকান বন্ধ হয়ে যাবে। বিস্কুট খেয়েই আজকের রাতটা কাটাতে হবে। ওদিকে ৩৯ নম্বর বাড়িটার স্নিগ্ধ রোশনাইয়ে উজ্জ্বলতা যোগাতে আগমন হয়েই চলেছে ভিভিআইপি অতিথিদের। সন্দীপ পাতিল, বলবিন্দর সান্ধু, রজার বিনি, মদনলাল। হঠাৎ মায়ের কথা মনে পড়ল। নিতান্ত বোতল খাওয়ার বয়সে রেডিও চালিয়ে গানের ষড়যন্ত্রে আমাকে ঘুম পাড়াত মা। একবার নাকি বোতলে দুধ শেষ, আর রেডিওয় গান শেষে শুরু হয়েছে ক্রিকেট ধারাবিবরণী। বহুদূর কোনও ক্রিজে আউট হয়েছেন ব্যাটসম্যান মদনলাল। কমেন্টেটর এর গলায় হাহুতাশ 'অউর ইয়ে মদনলাল আউট!' রেডিও টার ধারে পাশে থাকা শ্রোতাদের হতাশাব্যাঞ্জক চিৎকার ছোট্ট 'আমি' টাকে বিচলিত করে অদ্ভুত এক উল্লাস দিয়েছিল। আধা-বোধের সেই দিনগুলোয় 'আউট' শব্দের অর্থভ্রমে কাচের ফিডিং বোতল মাটিতে ফেলে তার ওপর নাকি শুরু করেছিলাম তুড়ুক নাচ। মুখে চিৎকার 'মদনলাল আউৎ মদনলাল আউৎ'। পরে মনে হয়েছে ভাঙা কাচে না বুঝে নেচে আমার চারপাশে সেদিন না জানি কত গব্বর সিং তৈরি করেছিলাম। হাফপ্যান্ট থেকে ফুলপ্যান্ট হওয়া কৈশোরে এই ক্যাবলামির ঘরোয়া ধারাবিবরণীতে নিতান্ত গুরুত্বহীন এই ঘটনায় কতবার যে আমাকে বিব্রত লজ্জিত করেছেন মদন লাল! সম্বিত ফিরে পেলাম এক পরিচিত কণ্ঠের ডাকে-'আপ এক হেল্প করেঙ্গে?' উঁচু লোহার গেটটা ঠেলে বেরিয়েছেন কালো হাইনেক টি শার্ট আর জেড ব্ল্যাক জিন্স পরা 'পামোলিভ কা জবাব নেহি হাসিওলা লোকটা'! কোলে দুধসাদা পোষ্য সারমেয়। আড়ষ্ঠতা নিয়ে এগিয়ে গেলাম, বললাম-টেল মি স্যার হোয়াট ক্যান আই ডু ফর ইউ? ক্যাপ্টেন দেব বললেন - অন্দর সাব লোগ সব পার্টি মে হ্যায় আপ থোড়া উনি ভিডিও শ্যুট কর দেঙ্গে?.......

No comments: