Saturday, March 1, 2025

বয়স শঙ্কা নয় এনার কাছে বয়স সংখ্যা মাত্র

বার্ধক্যের অনেক সমস্যা। পদে পদে ভয়। তাই অনেকেই ভাবেন বয়স একটি শঙ্কা। আবার অনেকে ভাবেন বয়স স্রেফ একটি সংখ্যা। যারা বার্ধক্য কিংবা বয়সের তোয়াক্কা না করে নিজের কাজ করে চলেন তেমনই এক অশীতিপর গুণীজনের গল্প আজ । 



ভারতে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ক্রমবর্ধমান, এবং তাঁদের জীবনধারণের মান বিভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যার ৮.৬% ছিল ৬০ বছরের বেশি বয়সী, যেখানে মহিলাদের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত বেশি। বয়স্কদের জীবনধারণের মান তাঁদের আর্থিক অবস্থা, পারিবারিক সহায়তা এবং স্বাস্থ্যসেবার প্রাপ্যতার ওপর নির্ভর করে। ভারতে ১৮.৭% বয়স্কদের কোনো আয়ের উৎস নেই, এবং এই অনুপাত ১৭টি রাজ্যে জাতীয় গড়ের চেয়েও বেশি। এছাড়া, ৪০% এরও বেশি বয়স্করা সবচেয়ে দরিদ্র শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত।


ভারতের সংবিধান বয়স্ক নাগরিকদের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের অধিকার নিশ্চিত করেছে। ২০০৭ সালে প্রণীত 'দ্য মেনটেন্যান্স অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অব পেরেন্টস অ্যান্ড সিনিয়র সিটিজেনস অ্যাক্ট' অনুযায়ী, সন্তানরা তাঁদের বয়স্ক পিতামাতার দেখাশোনা করতে বাধ্য। এছাড়া, রাজ্য সরকারগুলোকে প্রত্যেক জেলায় কমপক্ষে ১৫০ শয্যাবিশিষ্ট বৃদ্ধাশ্রম স্থাপন করতে হবে। সার্বিকভাবে, ভারতে বয়স্কদের জীবনধারণের মান উন্নত করতে সরকারি উদ্যোগ থাকা সত্ত্বেও, আর্থ-সামাজিক বৈষম্য এবং স্বাস্থ্যসেবার অভাবের কারণে অনেক প্রবীণ নাগরিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন।


আমাদের দেশে ৮০ বছরের ওপরে বয়স্ক মানুষদের জীবনযাপন মূলত তাঁদের শারীরিক অবস্থা, পারিবারিক পরিবেশ ও আর্থিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে। অনেক প্রবীণ মানুষ তাঁদের পরিবারের সন্তান সন্ততি-নাতি-নাতনির সঙ্গে সময় কাটান, নয়ত পূজা অর্চনা করেন, কেউ কেউ আধ্যাত্মিকতা, ধ্যান ও যোগে দিন কাটান। আর্থিক দিক থেকে পেনশন বা অবসরকালীন ভাতার ওপরে অনেকেই নির্ভরশীল। আবার অনেক মানুষ তাঁদের পরিবারে অন্যের ওপরে নির্ভরশীল হয়েই জীবনের শেষ দিনগুলো কাটিয়ে দেন।


তাঁদের মধ্যে কারও শখ বই পড়া, রেডিও শোনা, পুরনো দিনের স্মৃতিচারণ, বাগান করা, ধ্যান-যোগ চর্চা এবং মন্দির বা ধর্মস্থলে যাওয়া। কিছু প্রবীণ ব্যক্তি সমাজসেবামূলক কাজেও যুক্ত থাকেন, যেমন ছোটদের পড়ানো বা গরিবদের সহায়তা করা। মনোভাবের দিক থেকে অনেকে জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞ ও সন্তুষ্ট থাকেন, তবে কিছু মানুষ একাকিত্ব, অবহেলা বা শারীরিক অসুস্থতার কারণে মানসিক অবসাদেও ভুগতে থাকেন। পরিবারের সান্নিধ্য,সামাজিক স্বীকৃতি ও যত্ন তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। প্রযুক্তির প্রসারের কারণে কিছু প্রবীণ মানুষ স্মার্টফোন ও সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারও শিখছেন, যা তাঁদের যোগাযোগ ও বিনোদনের নতুন মাধ্যম হয়ে উঠেছে। 


জয়ন্ত সাহা, একজন ফটোগ্রাফার। তবে ফটোগ্রাফি পেশা নয় জয়ন্তবাবুর। তাঁর ছবি প্রদর্শিত হয় বিভিন্ন সালোন আর প্রদর্শনীতে। বয়স বিরাশি হলেও এই বয়সে অন্যেরা যখন কাবু তখন তাঁর প্রবীণ আঙুল গুলি নিয়মিত ছুঁয়ে আসে ক্যামেরার শাটার বটন। পথে নেমে প্রতিদিন মুহূর্তদের ধরার ছায়াবাজি খেলেন এই অশীতিপর যুবক। কলকাতার রাস্তায় দিনে রাতে যে অফুরান প্রাণ তাকেই ধরার জন্যে হন্যে মাস্টার ফটোগ্রাফার জয়ন্ত সাহা।

বলেন "আমাদের সম্পর্কের পাঠ পড়ায় ইউনিভার্স।" তাঁর ফটোগ্রাফির বই OUR KOLKATA এই ভিডিওয়  জানুন তাঁর জীবনের গল্প, সঙ্গে কলকাতার অতীত থেকে বর্তমান ফটোগ্রাফি সংস্কৃতির এক চলমান ইতিহাস।  



আমি জয়ন্ত বাবুর সঙ্গে আড্ডা দিলাম কিছুদিন আগে। দেখুন সেই আড্ডার ভিডিও আমার ইউটিউব চ্যানেল Wonder World Bangla য়। লিঙ্ক নিচে দেওয়া রইল।