একটা ভূকম্পন, বেশ কিছু জায়গায় ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণ হানি, নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া কিছু জনপদ, স্মারক। মনে মনে ক্ষণিকের আতঙ্ক, প্রকৃতির রোষে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার ভয়। কিন্তু তারপরও প্রতিরোধের কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার বিন্দুমাত্র প্রচেষ্টা নেই।
আমাদের প্রকৃতি বিমুখ ও উন্নয়ন মুখী মানসিকতা, নিজেকে সর্বগ্রাসী সর্বত্রগামী ভেবে নিয়ে পৃথিবীর মালিক হওয়ার লোভ, আর মুনাফা মুখী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় জর্জরিত গোটা পৃথিবী। ভূগর্ভস্থ জলের যথেচ্ছ ভাবে শোষণ, বনভূমি হু হু করে কমে যাচ্ছে । শহর, মফস্বল জুড়ে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাইরাইজ বিল্ডিং। জল চাই, জল। বৃষ্টির জল কে জমিয়ে ব্যবহার যোগ্য করার প্রণালী জানা থাকলেও, তার অভ্যাস করতে বড্ড বিমুখ আমরা। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে।
প্রকৃতিবিদরা বলেছেন, গঙ্গার মোহনার কাছে বৃষ্টির জল শোষণ করার ক্ষমতা হারিয়েছে ভূগর্ভস্থ স্তর। ফলে বৃষ্টির সব জল চলে নদীবাহিত হয়ে চলে যাচ্ছে সাগরে। কৃষ্ণনগর থেকে মোহনা পর্যন্ত ভূগর্ভে তৈরি হয়েছে কাদার একটি স্তর। আগামী দিনে যদি গতকালের মত বা তার চেয়ে একটু বড় কম্পন হয়, তাহলে এই কাদার স্তর কেঁপে উঠে যেকোন সময় বিব্রত করতে ই পারে আমাদের সাধের সভ্যতা কে। হয়ত কিছু নাও হতে পারে ।
কিন্তু কিছু ছোট ছোট প্রচেষ্টা করতে দোষ কোথায়? একটা দেওয়াল লিখন ছেলেবেলায় দেখতাম, "একটি গাছ একটি প্রাণ", এখন আর দেখি না, হয়ত অন্য কিছু এখন প্রাণ এর সমার্থক। দেওয়াল জুড়ে, কাগজ জুড়ে, চ্যানেল জুড়ে তারই প্রচার। কিন্তু বিশ্বাস করুন সময় বড্ড কম, আর পাপ এর ফর্দটা এত বড় যে প্রায়শ্চিত্ত করার সময় খুব কম। একমাত্র মানুষই বোধহয় একমাত্র প্রাণী যে বেঁচে থাকার জন্য যথেচ্ছাচার চালায় প্রকৃতির ওপর।
আমাদের চারিদিকে গড়ে ওঠা নতুন নতুন কংক্রিটের পাঁজর, ভয় হয় একদিন এরই মাঝে না কংক্রিট-সমাধি হয় আমাদের । বাঁচার রেসিপি টা কিন্তু খুব সহজ, গাছ লাগাও আর লাগাম টানা ভূগর্ভস্থ জলের ব্যবহারে। তারই সাথে পৃথিবীর দিকে মুখ ফেরাও। নইলে তোমার উদ্ধত মাথা ধূলোয় মেশাতে একটা মিনিট ই কাফি।
শিক্ষাটা কি নেব আমরা?
Sunday, April 26, 2015
শিক্ষা টা কি নেব?
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment