Wednesday, August 21, 2024

মশাও পৃথিবীর মঙ্গলের কাজে লাগে

কলকাতার চিকিৎসাশাস্ত্রের ইতিহাসে ২০শে অগস্ট দিনটি বিশেষ। ১৮৯৭ এর ২০শে অগাস্ট স্যার রোনাল্ড রস স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার পৌষ্টিকতন্ত্রে ম্যালেরিয়ার জীবাণু আবিস্কার করেন। প্রথমবার প্রমাণিত হয় মানুষের ম্যালেরিয়া রোগের বাহক মশা। এই আবিস্কার চিকিৎসা  বিজ্ঞানে যুগান্তকারী। 
তৎকালীন প্রেসিডেন্সি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক হিসাবে রোনাল্ড রস তখন কলকাতায়। এখানেই তিনি কাজ করেন ম্যালেরিয়া সম্পর্কে তাঁর যুগান্তকারী আবিস্কার নিয়ে। বর্তমানে সেই হাসপাতালকে আমরা এসএসকেএম হাসপাতাল নামে চিনি। 
পরিসংখ্যান বলছে প্রতি বছর প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এই কারণে মশা পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্রাণী। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জি়কা'র মতো মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত পৃথিবীর প্রায় ১০০টি দেশ। 
বিজ্ঞানিরা বলেন প্রাণীদেহ থেকে নির্গত কার্বনডাই অক্সাইড,গন্ধ ও তাপমাত্রা মশাকে মানুষের প্রতি আকৃষ্ট করে। কেবল স্ত্রী মশাই প্রাণীদেহ থেকে রক্ত খেয়ে থাকে। আর এই রক্ত মশার বংশবিস্তারের জন্য ডিম তৈরিতে প্রোটিনের উৎস হিসেবে কাজে লাগে। পুরুষ মশারা মানুষকে কামড়ায় না,তারা উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে রস সংগ্রহ করে। 
আচ্ছা কখনও ভেবে দেখেছেন যে মশার কারণে আমাদের এত রোগভোগ এই পৃথিবীতে যদি সেই মশাই না থাকত তাহলে কেমন হত? কখনও  ভেবে দেখেছেন মশার কি কোনও উপকারিতা আছে? আসলে প্রকৃতির কোনও সৃষ্টিই হেলাফেলার নয়। প্রত্যেকের নিজস্ব কাজ আছে। মশার ও নির্দিষ্ট কাজ রয়েছে।
পৃথিবীতে ৩৫০০টি প্রজাতির মশা আছে তাদের মধ্যে প্রায় ৩৪০০ প্রজাতির মশা কোনো ক্ষতি করে না। মাত্র ৯০টির থেকে একটু বেশি সংখ্যক প্রজাতির মশা মানুষের জন্য বিপজ্জনক। বাকিরা কোনও অনিষ্ট করে না।

বরং তারা পৃথিবীর খাদ্য-শৃঙ্খলে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।  কিছু মাকড়সা, টিকটিকি, গিরগিটি, ব্যাঙের মুখ্য খাদ্য মশা। এছাড়া মশার ডিম মাছের খাবার। তাই মাছের খাদ্য চাহিদা মেটাতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে মশা। যখন মশা উড়ন্ত অবস্থায় থাকে তখন ফড়িং,ছোট ছোট পাখি ও কীটপতঙ্গ মশা খেয়ে জীবনধারণ করে।
মশা একটি ইনডিকেটর স্পেসিজ। একটি বাস্তুতন্ত্রে মশা থাকা মানে সেখানকার পরিবেশের মাপকাঠিগুলি যেমন তাপমাত্রা,আর্দ্রতা ও জলের মান সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়              
ফ্লোরিডা ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় জানা গেছে 'পুরুষ মশা ফুলের মধু খায়, যা পরাগ মিলনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। পৃথিবী থেকে যদি মশা  বিলুপ্ত হয়,তাহলে বহু খাদ্য-শৃঙ্খলের উপর তার সরাসরি প্রভাব পড়বে।’ আর একদল গবেষক বলছেন,মশার যায়গায় অন্য পতঙ্গ পরাগ মিলন করলেও   মশার প্রতিস্থাপক পতঙ্গটি মশার চেয়েও ভয়ঙ্কর এবং দ্রুতগতিতে রোগ বিস্তার করবে।’
মশা না থাকলে পাখির সংখ্যা ব্যাপক হারে কমবে। অনেক কীট-তাত্ত্বিকদের মতে, মশার কারণে গ্রীষ্মমন্ডলীয় জঙ্গল এলাকায় মানুষ বসবাস করতে পারে না। সেসব অঞ্চলে মশা না থাকলে মানুষ আরও অনেক বেশি গাছপালা কেটে বন উজাড় করে বসতি স্থাপন করত। অনেক বেশি পরিমাণ মশার বসবাস উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে। প্রতি বছর যে পরিমাণ পরিযায়ী পাখিরা এখানে আসে তাদের মূল খাদ্য হচ্ছে মশা। তাই যদি মশা-ই না থাকে, তাহলে প্রায় ৫০ শতাংশ পরিযায়ী পাখি আর দুই মেরুতে আসবে না। ফলে সেখানকার পরিবেশ বদলাতে শুরু করবে। তাছাড়া ভিনদেশ থেকেও বছরের নানা সময় লক্ষাধিক তৃণভোজী পশু এই অংশে মাইগ্রেট হয়ে থাকে। মশার কামড় থেকে বাঁচতে যে জায়গায় মশার ঝাঁক বেশি থাকে, সে জায়গা এড়িয়ে অন্য পথ বেছে নেয় এই তৃণভোজী প্রাণীরা। হঠাৎ যদি কোনো বছর এই মশার ঝাঁক না থাকে, তাহলে কোন দিকে যেতে হবে, তা তারা বুঝতে পারবে না। ফলে রাস্তা হারিয়ে গণহারে সবাই মারা যাবে। আর এরা এত সংখ্যায় তৃণভোজী মারা গেলে অন্যান্য মাংসাশী প্রাণীদের খাদ্য সংকট    হবে। তাছাড়াও এদের মলে থাকা বীজের কারণে যে গাছ জন্মায় তাও বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে।

এই বিষয়ের ওপরে আমার তৈরি একটি ভিডিও দেখুন। লিঙ্ক দিচ্ছি।

https://youtu.be/kWudaJV9_i4?si=RIuc1UDJuFAe4b_O


Tuesday, August 6, 2024

পরিচারিকা থেকে কলকাতার 'রাতের রাণী- মিস শেফালি' হয়ে ওঠার অবিশ্বাস্য কাহিনী



রাতের কলকাতা। এক রহস্যময়, আলো আঁধারে ঘেরা। আজ আপনাদের সামনে অতীত কলকাতার প্রথম ক্যাবারে কুইনের গল্প। অনেক প্রশ্ন আর রহস্যের মাঝে শেষ রাতের শিউলি ফুলের মতো ফুটে ছিলেন সেই নিশি সম্রাজ্ঞী। আজ মিস শেফালির গল্প। 

তখনও দেশভাগ হয়নি। বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ থেকে উদ্বাস্তু হয়ে কলকাতার আহিরিটোলায় এসেছিলেন দাস পরিবার। সেই পরিবারের তৃতীয় সন্তান একটি মেয়ে। নাম আরতি দাস। বাবা অসুস্থ। কাজ করতে পারেন না। এদেশে আসবার সময়ে সামান্য যা কিছু সঞ্চয় ছিল তাও নিঃশেষিত হয়েছে। পরিবারের মুখে অন্নের যোগান তুলে দিতে আরতির মা গার্হস্থ সহায়কের কাজ নিলেন। বাড়িতে অনেকগুলো মুখ। রোজগার নিতান্তই কম! তাই কিশোরী আরতি বাধ্য হয়ে এক রকম জোর করেই চৌরঙ্গীর এক অ্যাংলো ইন্ডিয়ান পরিবারে কাজের মেয়ে হিসাবে নিযুক্ত হল। আর সেখান থেকেই মোড় ঘুরে গেল আরতির। আরতি থেকে মিস শেফালি। কলকাতার প্রথম ক্যাবারে কুইন হয়ে ওঠার সেই উপাখ্যান আজ। 



মিস শেফালি একবার একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক অনির্বাণ চৌধুরীকে তাঁর উত্থানের গল্প বলেছিলেন। কী বলেছিলেন সেদিন ক্যাবারে কুইন? 

মিস শেফালি তাঁর জীবদ্দশায় সেই সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন- 

'অনেক নদী, নালা, কাদা পেরিয়ে হিমালয় দেখেছি। বাবার কষ্ট, ভাইয়ের কান্না, দেখেছি। ১০ সাড়ে দশ বছর বয়সে আহিরিটোলার বানী নামের এক মহিলাকে জোরাজুরি করতাম কাজ দাও কাজ দাও। সে একটা কাজ দিল। মায়ের অনুমতি নিয়ে বাণী আমাকে এক অ্যাংলো ইন্ডিয়ান বাড়িতে নিয়ে যায়। প্লেট ধোয়ার কাজ। সেখানে রোজ বিকেলে খানাপিনা ও নাচের আসর বসত।' 



দেখে দেখে সেই নাচের ঘোর লেগে যায় আরতির চোখে আরতির মনে। লুকিয়ে লুকিয়ে সে সব নাচ তুলতে থাকেন আরতি। তখন সে নিতান্তই বালিকা। ওই আসরে গান গাইতে আসতেন ভিভিয়েন হ্যানসাম। তখনকার কলকাতার পানশালার ডাকসাইটে গায়ক। আরতি ভিভিয়েনকে ধরেন একটা কোনও কাজের জন্য। ভিভিয়েন প্রশ্ন করেন নাচতে পার? আরতি তাঁর গোপনে দেখে নকল করা নাচ দেখান। পানশালায় নর্তকীর কাজ জুটিয়ে দেন ভিভিয়েন। 

ভিভিয়েন আরতিকে প্রথমে নিয়ে যান গ্র্যান্ড হোটেলে। তারপর গ্র্যান্ড থেকে বার করে ভিভিয়েন আরতিকে নিয়ে যান ফিরপোজে। আরতির নাচ পছন্দ হয় ফিরপোজের ম্যানেজারের। কিন্তু ম্যানেজার বলেন এই নাম চলবে না। ভিভিয়েন বলেন আজ থেকে তোমার নাম আরতি দাস নয় । আজ থেকে তোমার নাম শেফালি। তোমার বেতন ৭০০ টাকা। আরতি জিজ্ঞেস করেন 'আবার বলুন কত বেতন!' নিজের কানকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না উদ্বাস্তু পরিবারের সেই অভাবী মেয়েটা। 

তবে প্রথম দিনের পরিধেয় পোশাক দেখে কেঁদে ফেলেন সদ্য আরতি থেকে মিস শেফালী হওয়া সেই কিশোরী। সেই পোশাকে যে শরীরের অনেকটাই হয়ে পড়ছিল উন্মুক্ত। বেআব্রু। তবে বল রুমে প্রথম নাচের আসরেই মাতিয়ে দেন তিনি। প্রশংসা আর হাততালিতে ফেটে পড়ে নিশি আসর। 

ফিরপোজও যেন চাইছিল ক্যাবারের নতুন রানীকে গড়ে পিঠে তৈরি করে নিতে। তারাই আরতিকে ইংরেজি ও হিন্দি ভাষায় কথাবলা শেখায়। নাচের বিভিন্ন রকমের তালিম দেয়। সেই সময়কার পার্ক স্ট্রীট অন্যরকম। ব্রিটিশরা তখনও শহরে। আরতি সেই সাক্ষাৎকারেই বলেন "লুকিয়ে চুরিয়ে স্ট্রিপটিজ হতো পার্ক স্ট্রিটের পানশালা আর নিশিনিলয়গুলিতে"। যদিও তাঁর কাছে এমন প্রস্তাব কখনও আসেনি। তখন তিনি খ্যাতির শিখরে উঠছেন। তাঁর এক ঝলক পেতে শহরের সন্ধ্যাগুলো উদ্বেল। 'তোমাকে ভালবাসি , তোমাকে ছাড়া বাঁচব না, তোমাকে বিয়ে করতে চাই'। এমন প্রস্তাব আসত অহরহ। তিনি জানতেন এসব যৌবনের ঘোর। এ ঘোর চিরস্থায়ী নয়। তাই ওসব খুব একটা পাত্তা দিতেন না। 



সেই সময়ে কিছুদিন ধরে কেউ একটা ফোন করছিল। শেফালি ভেবেছিলেন তাঁর বহু অনুরাগীর মধ্যে কেউ বুঝি ফোন করছেন। শেষমেশ বাধ্য হয়েই একদিন ফোন ধরলেন শেফালি। ফোনটা ধরতে ফোনের ওপার থেকে শোনা গেল, "তুমি হয়ত আমার নাম শুনলেও শুনতে পার আমি সত্যজিৎ রায় বলছি। আমার তোমাকে চাই"। ২০ সার্কাস অ্যাভেনিউ থেকে গেলেন বিশপ লেফ্রয় রোড। সত্যজিৎ বলেছিলেন তোমার ব্লাউজ খুলতে অসুবিধে আছে? তুমি কি সিগারেট খাও? এক সাক্ষাৎকারে শেফালি শোনান প্রতিদ্বন্দ্বী ছবির শুটের সেই অভিজ্ঞতা-  

"আমি তো আগে কখনও করিনি। ডায়লগ বলতে গেছি। অমনি শুনলাম 'কাট'। স্ক্রিপ্টটা ছিঁড়ে ফেলে দিলেন। আমি তো ভয় পেয়ে গেছি। সত্যজিৎ তখন বলেন তোমার স্ক্রিপ্ট আমি এখানেই করে নেব"। 

বাঙালির ম্যাটিনি আইডল উত্তম কুমারকেও নাচিয়ে ছেড়েছিলেন মিস শেফালি। একবার উত্তম কুমার তাঁর নাচ দেখতে এসেছিলেন। এপ্রসঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে মিস শেফালি বলেন। 'সুযোগ পেলাম। উত্তম কুমারের সঙ্গে নাচার সুযোগ। মনে মনে বললাম তুমি উত্তম কুমার, আমিও মিস শেফালি। তোমাকে আমি আজ নাচাচ্ছি।' উত্তমকুমারকে দাদার মতো ভালবাসতেন মিস শেফালি। সুচিত্রা সেনের অভিনয়ের দারুণ ভক্ত ছিলেন কলকাতার ক্যাবারে কুইন। সুচিত্রা মিস শেফালির নাটক 'সম্রাট সুন্দরী' দেখতে আসেন একবার।    



আজীবন মুম্বইয়ের হেলেনকে নিজের গুরু মানতেন। একলব্য যেমন গুরু দ্রোণকে গুরু মানতেন তেমনি। তাই হেলেনের সঙ্গে শো করতে চাননি কখনও। 

কখনও সখনও মনে হয়েছে মিস থেকে মিসেস হয়ে যেতে। কিন্তু সেই মনে হওয়া সেই ইচ্ছেকে কখনও আমল দেননি। কারন তিনি জানতেন আজ যে পুরুষ তাঁর রূপে মুগ্ধ হয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে সে একদিন ছেড়ে চলে যাবেই। বরং তিনি শক্ত করে আঁকড়ে ধরেছেন আরতি দাসের হাতটাই। যে আজীবন তাঁর সঙ্গে সঙ্গে ছায়া হয়ে থেকেছিল।

কোনোদিন শিল্পীর সম্মান জোটেনি মিস শেফালিদের। মুখ থেকে লাইমলাইট থেকে সরে যাওয়ার পর  আর পাঁচটা সাদামাটা

মহিলার মতো জীবন কাটাতেন। হতাশ আরতি দাস মনে করতেন, ক্যাবারে ডান্সারদের শিল্পসত্ত্বা নিয়ে কেউ কোনও দিন কথা বলেননি। কাজ না থাকায় শেষ জীবনে আর্থিক সমস্যারও সম্মুখীন হয়েছেন । অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্যেও অর্থাভাব হয়। দীর্ঘদিন কিডনির অসুখে ভুগে। অবশেষে ২০২০সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মিস শেফালি পাড়ি দেন তারাদের দেশে। তাঁর আত্মজীবনী 'সন্ধ্যা রাতের শেফালি’ পাঠক মহলে যথেষ্ট সাড়া ফেলে। এই পার্ক স্ট্রিট থেকে উত্থান আর এক সিঙ্গারের। তিনি পদ্মভূষণ প্রাপক ঊষা উত্থুপ। অথচ আরতি দাস ওরফে মিস শেফালিরা থেকে যান ক্যাবারে কুইনের মতো এক প্রশ্ন সূচক তকমা নিয়েই। আপনাদের কী মত এই প্রসঙ্গে? কমেন্টে জানান। আর এই বিষয়ের ওপরে আমার  তৈরি একটি ভিডিও দেখুন নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে। 



 

Thursday, June 20, 2024

চোলাই মদ খেয়ে মরলে ২লাখ! আর চোলাই থেকে বাঁচালে?

সাধারণত মোটরবাইক চালালে আমি ফোন ধরি না। কিন্তু সেদিন ১৪টা ফোন ধরেছি। সেক্টর ফাইভ থেকে বাড়ি আসার মধ্যে। অবশ্যই বাইক দাঁড় করিয়ে। একটা সর্বভারতীয় চ্যানেলের চাকরি ছাড়ার কথাটা সদ্য জানিয়ে পোস্ট করেছিলাম ফেসবুকে। একের পর এক ফোন, মেসেজ, হোয়াটসঅ্যাপ। ওই সময়ে মা আর স্ত্রীর খুব সাপোর্ট পেয়েছিলাম। বন্ধুরা অনেকেই বলেছিল যা হবে ভালই হবে। বাবা বলেছিলেন, "এরপর করবি কী?" 

কোয়েল ওয়ান্ডার ওয়ার্ল্ড বাংলা নামে একটা ইউটিউব চ্যানেল আর তার ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রাম পেজ তৈরি করেছিল। শুরু করলাম সেখানেই। স্বাধীন সাংবাদিকতা। 



কেন প্রথম স্টোরি কল্যাণী পালুই?  

কল্যাণীদির সঙ্গে অনেকদিনের আলাপ। ফোনে। বেশ কয়েকবার যাব যাব করেও যাওয়া হয়নি ওনার কাছে। ভাবলাম ওনার আর ওনার মেয়েদের ওপরেই তৈরি করি প্রথম ভিডিওটা। চোলাই মদের বিষক্রিয়ায় বাংলার বিভিন্ন জেলায় এখনও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। মিডিয়ায় সব খবর আসে না। এটা জানি। বেশ জোর দিয়েই বলতে পারি। কারন মিডিয়ার অনেক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাঁরা পচা সুপারির তৈরি গুটখাকে পান মশলা বলে খবরের মাঝে মাঝে গেলাবেন। সেই সংবাদ মাধ্যম বা তাঁদের ইন্টারনেট পেজ যে অনেক শিশু, যুবক দেখে ওই বিষাক্ত পচা সুপারিকে ফ্যান্টাসাইজ করে মারাত্মক মুখের রোগের সম্মুখীন হবে এ সব খেয়াল তাঁরা রাখবেন না এটাই স্বাভাবিক। ইনকাম বড় বালাই। টার্গেট বালাই ৬০। 

এই অবস্থায় কল্যাণী দির মতো মানুষদের প্রচার আরও বেশি করে করা দরকার। অন্তত তাতে আমার ৭বছরের সন্তানের কাছে আমি মাথাটা উঁচু করে থাকতে পারব! টাকা পয়সা প্রয়োজন কিন্তু মগজ, শিরদাঁড়া? অনেকেই 'শিরদাঁড়া বিক্রি নেই' ক্যাপশন লেখা টিশার্ট পরেন। তাঁদের অনেককেই চিনি। কী পরিমাণে বিকৃত মগজ ও বিক্রিত শিরদাঁড়া সেসব শরীরে! যাই হোক সেকথা লেখা যাবে অন্য কোনও ব্লগে! এখানে কল্যাণী পালুইয়ের গল্প। 


শুটিংয়ের মাঝে আমাদের একটা সেলফি মোমেন্ট


কল্যাণী পালুই সমাজসেবী। কাজ শুরু করেছেন ২০০৪ থেকে। শেষ ২০ বছর ধরে দুহাতে সামলাচ্ছেন দুটি বড় কাজ। তাঁর ছোট্ট অফিস গ্রামীণ হাওড়ার তুলসিবেড়িয়ায়।


বাল্যবিবাহ রোধে স্কুল, কলেজে, গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে ঘুরে নাবালিকাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা। সেই সচেতনতা আজ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে এক ক্লাস নাইনের মেয়ে তার বিয়ের কথা শুনে যোগাযোগ করে তুলসিবেড়িয়ার কল্যাণীদির মেয়েদের সঙ্গে। তাঁরা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে সেই মেয়ের বিয়ে বানচাল করে দেয়। নবম শ্রেণির সেই মেয়ে এখন বি,এড করছেন। আবার লুকিয়ে চুরিয়ে নাবালিকার বিয়ে দিলেও তার প্রতিকার করতে ছুটে যান কল্যাণী।

বাংলার গ্রামে গ্রামে সচেতনতার অভাবে আজও বহু নাবালিকার বিয়ে হয়। অনেক নাবালিকাকেই পাচার করে দেওয়া হয়। গল্প গুলো বলছিলেন কল্যাণী। তিনি হাওড়া স্টেশন থেকে এমনই ৬জন মেয়েকে উদ্ধার করেন একবার। কল্যাণীর কর্মকাণ্ডের আর একটি দিক-

বেআইনি চোলাই মদের ঠেকে চড়াও হয়ে মদ কেনাবেচার সঙ্গে যুক্তদের আটক। তারপর পুলিশ ও আবগারি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে দোষীদের ধরিয়ে দেওয়া। আর বাজেয়াপ্ত মদ আবগারি দফতরের হাতে তুলে দেওয়া। কখনও সখনও ভাঙচুর। আগুন লাগিয়ে মদের ঠেক পুড়িয়ে, জ্বালিয়ে দেওয়া। লাল পাড় সাদা শাড়ি, হাতে শাঁখা পলা। গ্রামের সাধারণ ঘরোয়া মহিলারাই অবৈধ মদের আসর দেখলে রণং দেহি হয়ে ওঠেন। তখন চুলোয় যাক কাজ, তা সে যত গুরুত্বপূর্ণই হোক না কেন!

ওঁরা নিতান্ত দ্ররিদ্র পরিবারের মহিলা। বাড়িতে বাবা, ভাই আর স্বামীদের মাতলামি দেখে অতিষ্ঠ। অনেকে প্রিয়জনদের মারা যেতেও দেখেছেন বিষমদের বিষক্রিয়ায়।দেওয়ালে ঠেকেছে ওঁদের পিঠ। তাই ওঁরা আজ ঘুরে পাল্টা মারটা দিচ্ছেন। আপনারা দেখবেন এই ব্লগের সঙ্গে দেওয়া ভিডিও A Hooch Story Of Howrah চোলাই ও বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে লড়াই Wonder World Bangla তে মেয়েরা বলছেন এই কাজে তাঁরা মারা গেলেও কোনও আক্ষেপ নেই।

আর এই কাজের কাণ্ডারি কল্যাণী তাঁকেও হুমকি দেওয়া হয়েছে বহুবার। গলায় ছুরি ধরে চমকানো হয়েছে। তবু তিনি দমে যাননি। বাংলার বিভিন্ন জেলায় আর ওড়িশায় ছুটে গেছেন বিষ মদ চোরাই চোলাইয়ের বিরুদ্ধে এক অসম যুদ্ধে।

পথে নেমে লড়াইয়ে সামিল কল্যাণী


এখনও এই লোকসভা নির্বাচনের আগে ফোন এসেছে ওঁদের কাছে- কদিন ধর পাকড়টা যদি একটু বন্ধ রাখেন। তাও ম্রিয়মান হননি ওঁরা। বাধা যত এসেছে বুঝেছেন ঠিক পথেই রয়েছেন। যে পথে কষ্ট থাকলেও শান্তি আছে অনেকটা। সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে নিজেকে বিকিয়ে দেওয়া নেই। বরং বিলিয়ে দেওয়া আছে। ওঁদের পোশাকে আঁকতে হয় না 'শিরদাঁড়া বিক্রি নেই!'

আজ আপনাদের পরিচয় করাব সাধারণের মধ্যে মিশে থাকা এই অসাধারণ মহিলা আর তাঁর দলকে। পরিচয় করাব কল্যাণী পালুইকে।



দেখুন ভিডিও ওপরে ক্লিক করে। আর অবশ্যই কমেন্ট করে জানান কেমন লাগল এই ভিডিওটা।


 







Friday, April 19, 2024

সম্পর্কের উত্তাপ বাড়িয়ে রাখুন


আমার শ্বশুরমশাইয়ের বয়স প্রায় ৮৩ বয়স জনিত সমস্যা সঙ্গে অ্যালঝাইমার্স। ফলে সমস্যা একটু হয় মাঝেমধ্যে। এই সে দিন বললেন -
খবরের কাগজে বলছে হাওয়ায় নিউমোনিয়া হচ্ছে। 
যাঁরা স্মৃতিবিপন্ন মানুষদের নিয়ে ঘর করেন তাঁদের কাছে এরকম ঘটনা খুবই স্বাভাবিক। স্মৃতিশক্তির বিপন্নতায় ওঁরা ভুলতে থাকেন। যাক সে অন্য কথা। ইদানিং সেই শ্বশুরমশাইয়েরও গরম লাগছে। রীতিমত হাঁসফাঁস করছেন গরমে। সারা দুপুর জেগে থাকছেন গরমে। ওনার এয়ার কন্ডিশনার সহ্য হয় না। তাই আমরা একটা এয়ার কুলার কিনতে গেলাম। সেখানে গিয়ে একটা ঘটনা শুনলাম। সেটাই আজকের ব্লগে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি। 

পৃথুলা এক মহিলার গল্প। গল্প নয় মোটেই। একেবারে টাটকা বাস্তব। তো সেই মহিলা একে পৃথুলা মানুষদের গরম একটু বেশি লাগে তার মধ্যে এই মরুভূমির মতন গ্রীষ্মতাপ। একেবারে জর্জরিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেন একটি এসি কেনার। সিদ্ধান্তটি নেওয়ার সময় থেকে শুরু হয় তাঁর স্বামীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি। পরবর্তীতে সেটা পৌঁছায় ঝগড়াতে। ওই শোরুমের এক কর্মীর মুখে ঘটনার বিবরণ শুনছি। 


তারপর ওই মহিলা একপ্রকার নিরুপায় হয়ে নিজেই চলে আসেন ইলেকট্রনিক কোম্পানির শোরুমে। সঙ্গে নিজের জমানো ২৮ হাজার টাকা। পিছু পিছু চলে আসেন ওই মহিলার স্বামী। শো রুমেই শুরু হয়ে যায় দম্পতির বাগবিতণ্ডা। শো রুমের কনকনে এয়ার কণ্ডিশনার চলছিল। তার মধ্যেই মহিলা দরদর করে ঘামছিলেন। স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া চলছিলই। মহিলা ততক্ষণে বিলিং করিয়ে নিয়েছেন। ২৮ হাজার ডাউন পেমেন্ট। বাকি টাকা ইন্সটলমেন্টে। পরের দিন সকালেই ডেলিভারির কথা ছিল। পৃথুলা সেই মহিলা বারেবারে স্টোর কিপারদের বলেছিলেন সকাল সকাল এসিটা ডেলিভারি দিতে।

পরের দিন সকালে শোরুম খুলতে ওই ভদ্রমহিলার স্বামীর একটা ফোন। এ প্রান্তে শোরুমের কর্মী, যিনি ফোন ধরেছিলেন তিনি বলছেন- 
-ডেলিভারি ম্যানরা এলেই আপনাদের এসিটা পাঠানো হবে। 
ও প্রান্তে ভদ্রলোক তখন হাউহাউ করে কাঁদছেন। বলছেন- 
-আর ওই এসি কার জন্য পাঠাবেন। ওটা আপনাদের কাছেই রেখে দিন। আমার স্ত্রী আজ ভোর রাত্রে মারা গিয়েছেন। 

শো রুমের কর্মীরা স্তম্ভিত। যেন সেই শোকের ছায়া ভুলতে পারছেন না এখনও ।                                  

গরমে সবাই ব্যতিব্যস্ত। সহজেই মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে। সম্পর্ক গুলোকে একটু সময় দিন। নইলে আপনার অবহেলার উপলব্ধি আপনি যতক্ষণে করবেন ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যাবে। সাবধানে থাকবেন এই উত্তাপে। মনের উত্তাপটা বাড়িয়ে রাখুন। বাইরের উত্তাপ বাড়ুক ক্ষতি নেই ভিতরের আগুনটা জিইয়ে রাখুন।

Sunday, March 3, 2024

ছোট বুনো বিড়ালদের নিয়ে 'চিতা প্রজেক্ট' এর ৭ বিজ্ঞানীর গবেষণায় উঠে এল বাংলার রাজ্য প্রাণী সংরক্ষণের গুরুত্ব

 



জ বিশ্ব বন্যপ্রাণ দিবস। গতকাল কথনের ফোন এল। কথন বন্দ্যোপাধ্যায়, আমার প্রাক্তন সহকর্মী উত্তান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুযোগ্য পুত্র। কুনো অভয়ারণ্যে থাকে ও। প্রাণী বিজ্ঞানী। ওর সঙ্গে কথা বলার পরই ভাবলাম এই ব্লগটা লেখা দরকার। 


ফিশিং ক্যাট বা মেছো বিড়াল

 

"ভারতের বাস্তুতন্ত্রে ছোট বিড়াল প্রজাতির প্রাণীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি বাস্তুতন্ত্রে এরা শিকারের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে। আর এর ফলে পুষ্টির স্থানান্তর সহজ হয় আর গুরুত্বপূর্ণ আবাসস্থলগুলি সুরক্ষিত রাখে। এই সব 'স্মল ক্যাট'দের পরিবেশগত তাৎপর্য গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও, এই প্রজাতিগুলি সংরক্ষণের নিরিখে খুবই কম মনোযোগ পায়। বৃহত্তর মাংসাশী বাঘ, সিংহ, লেপার্ড বা চিতার ওপর ফোকাস অনেকটাই বেশি। তাদের পাশাপাশি এদের অবস্থা সম্পূর্ণ এবং তীব্রভাবে বিপরীত।" 



কথাগুলো বলছেন সাতজন প্রাণী বিজ্ঞানী। মধ্যপ্রদেশের কুনো পালপুর চিতা প্রজেক্টে ওঁরা যুক্ত, শুরুর সময় থেকে। কথন বন্দ্যোপাধ্যায়, কৌশিক ব্যানার্জি, মারিয়া ভিট্টোরিয়া মাজামুতো, সুমন কোলে, জন এল কোপরোস্কি, কামার কুরেশি ও যাদবেন্দ্রদেব ঝালা ।  এই সাত বিজ্ঞানী ৯টি স্থানীয় ফেলিড (felids) বা অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের বন্য বিড়ালের উপরে তাঁদের রিসার্চ শুরু করেন। তাদের অবস্থা, বাসস্থান, সমস্যা আর চোরাশিকারের কারণে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কাজ শুরু হয়। 


এদের মধ্যে ছিল 

১ ক্যারাকল Caracal, 

২ ডেজার্ট ক্যাট desert cat, 

৩ ফিশিং ক্যাট fishing cat (পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য প্রাণী)

৪ জঙ্গল ক্যাট jungle cat

৫ রাস্টি স্পটেড ক্যাট rusty spotted cat

৬ ক্লাউডেড লেপার্ড clouded leopard

৭ লেপার্ড ক্যাট leopard cat

৮ মার্বেল্ড ক্যাট marbled cat

৯ গোল্ডেন ক্যাট golden cat


 এই নয়টি স্থানীয় ভারতীয় ছোট বিড়ালের ওপরে বিজ্ঞানীরা তাঁদের কাজ শুরু করেন। ওই বিড়ালগুলির সংরক্ষণের অবস্থা মূল্যায়ন করে, উন্নততর প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য ডেটা একত্রিত করেন। বিশ্বব্যাপী ছোট মাংসাশী প্রাণীর সংরক্ষণের নিরিখে এদের সংযোগ স্থাপন করেন বিজ্ঞানীরা। এই কাজ বেশ ক্টহিন ছিল। কারণ বিগত ৫০ বছরে এদের সম্বন্ধে তথ্যের ব্যাপক অভাব ছিল। আর এই সমস্যা বিজ্ঞানীদের জন্যে   পদে পদে বাধা হয়ে ওঠে। এর ফলে প্রাথমিকভাবে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ যে ইকোলজিক্যাল ডায়নামিক্স তার কোনও তথ্যই পাচ্ছিলেন না বিজ্ঞানীরা।  


তাই অন্য পথে কাজ শুরু হয়। সারা দেশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই 'ছোট বিড়ালদের' বাসস্থানের পরিবেশ, জলবায়ু, মানুষের সঙ্গে বাসস্থান ভাগের ফলে তৈরি সমস্যা, বড় মাংসাশী প্রাণীর উপস্থিতি, এদের বাসস্থানের টোপোগ্রাফি আর গাছপালার ধরণের ওপরে ভিত্তি করে কাজ শুরু করেন বিজ্ঞানীরা। ওই সাত বিজ্ঞানী দেখেন বন আইনের কিছুটা কড়াকড়ির কারণে ১৯৯৭ থেকে চোরা শিকারের বাজারে এই ৯ বিড়ালের চাহিদা কিছুটা কমেছে।  কিন্তু সমস্যা আরও ব্যাপক হয়েছে। 


এদের মধ্যে অধিকাংশই তাদের বাসস্থান মানুষের সঙ্গে ভাগাভাগি করে থাকে। যেমন আমাদের রাজ্য প্রাণী ফিশিং ক্যাট বা মেছো বিড়াল। 

তাই মানুষের সঙ্গে  এদের সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ফ্যাক্টর। রোজ বাড়ছে মানুষের জনসংখ্যা, বাড়ছে শিল্প, আর তার ফলে এদের বাসস্থান সংকুচিত হচ্ছে। তাই বিজ্ঞানীরা এদের সংরক্ষণে পরিবেশগত তথ্যের প্রয়োজনীয়তা দৃঢ়ভাবে তুলে ধরেন।  বিশেষ করে জনসংখ্যা, শিকার-শিকারীর সম্পর্ক এবং মানুষের কারণে এদের আবাসস্থল পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়াগুলি নিরীক্ষণ করেন। এই ফ্যাক্টরগুলিকে সংরক্ষণগত কৌশলগুলির মধ্যে একত্রিত করার পক্ষে সওয়াল করেন। 





এ বিষয়ে নিজেদের গবেষণার শেষে ওই বিজ্ঞানীরা বলছেন  বিশ্বব্যাপী ছোট বিড়াল বা  ফিলিডের (felids)সফল সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজন এদের জন্য রাজনৈতিক স্তরে দেখভাল ও প্রতিশ্রুতি। আর এদের বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক সমর্থন ও সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা। এই কাজ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় না হলে এরা বিপন্ন থেকে বিলুপ্ত হতে আর দেরি নেই। 


সারা দুনিয়ার বাস্তুতন্ত্রে এদের, এই ছোট বিড়ালদের ভুমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই এদের সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে যেকোনও সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন ওই বিজ্ঞানীরা।